২০২১ সালে লন্ডনে হুমায়ূন মেলা করার ঘোষণা
লন্ডনে এই প্রথম হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন পালন করলো সুন্দরবন ফাউন্ডেশন ইউকে,২০২১ সালে লন্ডনে হুমায়ূন মেলা করার ঘোষণা
সমকালীন বাংলা সাহিত্যের চূড়াবিহীন সফলতার দাবিদার জননন্দিত লেখক হুমায়ূন আহমেদের ৭২তম জন্মদিন অনুষ্ঠান প্রথমবারের মতো পালিত হয়েছে সাগরপাড়ের লন্ডনে।
সুন্দরবন ফাউন্ডেশন ইউ কে আয়োজিত ভার্চুয়াল এ অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে লন্ডন ভিত্তিক অনলাইন টেলিভশন tv19online.com.সংগঠনের সভাপতি আবু সুফিয়ান ঝিলামের সভাপতিত্বে ও প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী সিফাত সিমি ও সাধারণ সম্পাদক শেখ মহিতুর রহমান বাবলুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে যুক্ত হন দেশ বরেণ্য অভিনেতা নির্মাতা ও লেখকের সহধর্মিনী মেহের আফরোজ শাওন। বিশেষ অতিথি হিসাবে ছিলেন সনামধন্য অভিনেতা স্বাধীন খসরু ,ফারুক আহমেদ ও প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে ব্যাক্তিগত ব্যাস্ততার জন্য উপস্থিত না থাকতে পেরে ভিডিও বার্তা পাঠান কণ্ঠশিল্পী সেলিম চৌধুরী। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কিংবদন্তি হুমায়ূন আহমেদের সাড়া জাগানো সব গান গেয়ে শুনান ইউরোপে সবার পরিচিত মুখ প্রবাসী কণ্ঠশিল্পী মঞ্জুরী মন্ডল।
আরও পড়ুন ও জানুন:
## চলে গেলেন সত্যজিৎ রায়ের অভিনেতা সৌমিত্র : ডঃ সুবীর মণ্ডল
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মেহের আফরোজ শাওন বলেন হুমায়ূন আহমেদ বাংলা ভাষা ভাষীদের ভুবনে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার মতো মানুষের সাথে কাজ করা ও সার্নিধ্য পাওয়া অল্প যে কজনের সৌভাগ্য হয়েছিল আমি তাদেরই একজন । ব্যাক্তি হুমায়ূনের চাইতে মানুষ হুমায়ূন ছিলেন অনেক বড়ো অনেক মহৎ । তার মাঝে মানবিক গুণাবলি ছিল অনেক বেশি মাত্রায় প্রকাশিত। তিনি ছিলেন অসাধারণ কথক। হৃদয়বান এই মানুষটি কাজের প্রতি ছিলেন অবিচল। তিনি বলেন হুমায়ূন আহমেদ নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। তার বিকল্প মেলা ভার। শিশুদের অসম্ভব স্নেহ করতেন তিনি। একজন মানুষের পক্ষে এত বিচিত্র পথে কী করে চলা সম্ভব বুঝা দায় বলেও মনে করেন শাওন ?
বিশেষ অতিথি অনন্য প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম বলেন, মানব সেবায় যারা জড়িত তাদের সবার মাঝে এ কাজের প্রতি উদ্বুদ্ধকারী হিসেবে যে শক্তি কাজ করে, সেটা হচ্ছে মানুষের মানবতাবোধ। হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন তার উজ্জল দৃষ্টান্ত। তিনি মানবতার সেবায় নীরবে-নিভৃতে সহযোগিতা করতেন । দেশের দুস্থ মানুষকে বাঁচানোর জন্য সব সময় তিনি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করতেন । কিন্তু এ ঘটনা কাউকে জানতে দিতেন না। আত্মপ্রচার বিমুখ একজন মানুষ ছিলেন কালজয়ী এ কথা সাহিত্যিক । তিনি বলেন নিউইয়র্কে মরণঘাতী ক্যান্সার চিকিৎসা কালে তিনি ৫ টি বই লেখেন। মৃত্যুর আগে তার তিনটি শেষ ইচ্ছার কথা জানান । যার দুটি পূরণ হলেও শেষটি পূরণ হয়নি বলেও জানান দেশ সেরা এই প্রকাশক ।
বিশেষ অতিথি স্বাধীন খসরু বলেন ,দেশ সেবা, দেশের মানুষকে সেবা করার মানসিকতা মানবিক গুনাবলীর উৎকৃষ্ট উপাদান । দেশ প্রেমিক হওয়ার জন্য একজন নাগরিককে যে কয়েকটি গুণের অধিকারী হতে হয় হুমায়ূন আহমেদের মধ্যে তার সবকটি ছিল। তিনি বলেন হুমায়ূন আহমেদ ক্রিকেট খেলা তেমন একটা বুজতেন না। কিন্তু ভীষণ ভালো বাসতেন বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা ।
আরও পড়ুন গল্প
## বিয়ের রাত : শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
যেদিন দেশের কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ থাকতো সেদিন লেখা লিখি শুটিং সব বন্ধ করে সবাইকে নিয়ে মজা করে খেলা দেখার আয়োজন করতেন বলেও জানান খসরু । আর এক বিশেষ অতিথি ফারুক আহমেদ বলেন আমি হুমায়ূন আহমেদের সর্বাধিক নাটকে কাজ করার সুযোগ পেয়ে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি । এছাড়া তিনি একটি বইও উৎসর্গ করেছেন আমার নামে। যা সারাজীবন মনে থাকবে আমার। সুন্দরবন ফাউন্ডেশন ইউকের সভাপতি আবু সুফিয়ান ঝিলাম সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন চলতি বছরের জুলাই মাসে লন্ডনে হুমায়ূন মেলা করার পরিকল্পনা ছিল। সেভাবেই অগ্রসর হচ্ছিলাম আমরা। কিন্তু করোনা দুর্যোগে তা এবার আর স্বভব হয়নি। কিন্তু সব কিছু অনুকূলে থাকলে ২০২১ সালে সুন্দরবন ফাউন্ডেশন লন্ডনে বৃহৎ আকারে হুমায়ূন মেলার আয়োজন করবে ইনশাল্লাহ । সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শেখ মহিতুর রহমান বাবলু বলেন বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ প্রতিম পুরুষ হুমায়ূন আহমেদের অবদান ও তার সাহিত্যের মান কতটা উন্নত, তা সাহিত্যবোদ্ধা ছাড়া সাধারণ মানুষের বোঝার উপায় নেই। কালজয়ী এই লেখকের যথাযথ মূল্যায়ন হচ্ছে না বলেও আক্ষেপ করেন বাবলু। নুহাশ পল্লীকে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত করা , স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য সূচিতে হুমায়ূন আহমেদর লেখা অন্তভুক্ত করা ,সর্বস্তরে হুমায়ূন চর্চা ,আহমেদকে নিয়ে ব্যাপক গবেষণা ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার সঠিক পরিচিতি তুলে ধরা ভীষণ প্রয়োজন বলেও মনে করেন এই প্রবাসী সাংবাদিক।