রাজশাহীর রেলওয়ের তেল চুরির ঘটনায় মামলা : রিমান্ডের আবেদন ।
মোঃ আলাউদ্দিন মন্ডল, রাজশাহী ঃ
সম্প্রতি করোনা সংকটের কারণে আপাতত দুর্নীতির অভিযান কমে যাচ্ছে,এমতাবস্থায় দুর্নীতিবাজরা নতুন উদ্যমে দুর্নীতিতে লিপ্ত রয়েছে।
রাজশাহীতে রেলের ডিপো থেকে তেল চুরির সাথে জড়িত রেল কর্মকর্তা আবুল হাসানকে গ্রেফতার করে রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা। আজ শনিবার দুপুরে প্রত্যেক আসামির সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে বলে জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজশাহী আরএনবির পরিদর্শক আহসান হাবিব। তিনি বলেন, তবে আবেদনের শুনানি হয়নি।
ওই চার আসামি হলেন- রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুল হাসান, যমুনা ওয়েল কোম্পানির ডিপো ইনচার্জ আমজাদ হোসেন, ট্যাংকার ট্রাকের হেলপার ইলিয়াস হোসেন এবং যমুনা অয়েলের কর্মচারী মুকুল আলী। এদের মধ্যে আবদুল হাসানকে শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয়।
অন্য তিনজনকে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পাঁচ হাজার লিটার তেল চুরির সময় হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিনই রাতে রবিউল সরদারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী’র (আরএনবি) এসআই আসাদুজ্জামান। মামলা নং- ০১, তাং -২৩-০৪-২০২০।
রাজশাহী আরএনবির পরিদর্শক আহসান হাবিব জানান, প্রথম তিন আসামিকে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। আজ শনিবার প্রকৌশলী আবদুল হাসানকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রত্যেক আসামিরই সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আবুল হাসান রেলওয়ে পশ্চিম অঞ্চলের সিনিয়র সাব-ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (এস.এস.এ.ই/ইলেক) পদে কর্মরত ছিলেন। এদের মধ্যে, রেলের তেল চুরির মূল হোতা যমুনা ওয়েল কোম্পানীর ডিলার মোঃ রবিউল সরদারসহ চার জন পলাতক রয়েছে।
যমুনা ওয়েল কোম্পানীর ডিলার মোঃ রবিউল সরদার রাজশাহী জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি ও ফার্টিলাইজার এ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক। তিনিই মূলত রেলের ডিপোতে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের ম্যানেজ করে স্বল্প মূল্যে দির্ঘ কয়েক বছর যাবত চোরাই তেল ক্রয় করে আসছেন। আর এ ভাবেই তিনি শতশত কোটি টাকা কামিয়েছেন। হয়েছেন আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রেলের তেল বাদেও রবিউল সরদার পদ্মা ও যমুনা’র চোরাই তেল স্বল্প মূল্যে ক্রয় করে থাকেন। তার ট্র্যাঙ্ক লরিতে তিনটি করে চেম্বার রয়েছে। দুটি চেম্বারে পে অর্ডারের তেল ক্রয় করেন। অবশিষ্ট একটি চেম্বারে রেলের চোরাই তেল পাচার করেন। এটা হলো কাগজ কলমে চুরি।
জানা গেছে, খুলনা থেকে প্রতি মাসে দু’টি করে চালান আসে রাজশাহীর তেলের ডিপোতে। প্রতি চালানে ১০টি করে ওয়াগান পদ্মার ও ১০টি যমুনা কোম্পানীর তেল নিয়ে আসা হয় ওই ওয়াগান গুলিতে। সূত্র বলছে, অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারনে প্রতিটি ওয়াগানে তেলের ওজন বৃদ্ধি হয় ২০০ থেকে ৩০০ লিটার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিপোর একজন কর্মচারী বলেন, রাজশাহী জেলার প্রতিটি ডিলারদের ট্র্যাঙ্ক লরিতে ওজনে কম তেল সবরাহ করেন তেল ডিপোর ইনচার্জরা। পরে অবশিষ্ঠ বাড়তি তেলগুলি কম মূল্যে ক্রয় করে পাচার করছেন রবিউল সরদার। এছাড়া শীতের সময় তেলের ওজন কমে বলে জানা গেছে। আর ওই কম তেল ভুর্তিকী দিতে হয় সরকারকে।