• ঢাকা
  • রবিবার, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মে, ২০২৪ ইং
মধুখালীতে রস সংগ্রহ করে পাটালি তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা
মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের খেজুরের রস’ আর পাটালি সারা দেশে নামকরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে খেজুরের গুড়ের পাটালি তৈরির মহোৎসব। বাড়িতে বাড়িতে খেজুরের রস জ্বালিয়ে পিঠা পায়েসসহ নাম না জানা হরেক রকমের মুখরোচক খাবার তৈরির ধুম পড়েছে। শীত মৌসুমে রস ও গুড়ের চাহিদা মেটাতে গাছিরা ব্যস্ত হয়ে খেজুর গাছ খিলি দিতে ও রস আহরণ শুরু করেছে।
ধারালো দা (গাছিদা) দিয়ে খেজুর গাছের সোনালী অংশ বের করে থাকে, যাকে বলে চাঁচ দেওয়া। চাঁচ দেওয়ার সপ্তাহ খানেক পর নোলন স্থাপনের মাধ্যমে শুরু হয় সুস্বাদু খেজুর রস আহরণের কাজ।
এই মৌসুমে খেজুরের রস দিয়ে গ্রামীন জনপদে শুরু হয় শীতের আমেজ। শীত যত বাড়বে খেজুরের রসের মিষ্টি তত বাড়বে। গ্রামীন জনপদে শীতের সব থেকে বড় আর্কষণ দিনের শুরুতে শীতের সকালে খেজুরের রস, সন্ধ্যায় রস ও সুস্বাদু গুড়-পাটালি। সুস্বাদু পিঠা ও পায়েস তৈরিতে আবহমান কাল থেকে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে খেজুরের গুড় ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানকার কারিগরদের দানা পাটালি তৈরীতে ব্যাপক সুনাম থাকায় খেজুরের গুড় পাটালির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশে ও বিদেশে।
উপজেলার পুরান মধুখালী গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আলাউদ্দিন জানান, মধুখালীর খেজুরের রস ও পাটালি গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক। গুড়-পাটালির দাম বেশি পাওয়ার জন্য এ অঞ্চলের গাছিরা শীত মৌসুম আসার আগেই খেজুর গাছ থেকে রস আহরণের জন্য আগাম গাছকে প্রস্তুত করে রাখে। আগাম গাছ তোলায় রস ও গুড়ের দাম বেশি পাওয়া যায়। এক একটি খেজুর গাছ রস আহরণের জন্য প্রস্তুক করতে হয় আগে ভাগেই।
গাছি  মোঃ মনিরুল জানান, গত সাত বছর ধরে তারা রাজশাহির চারঘাট থেকে মধুখালী উপজেলায় নিয়মিত এসে গুড় তৈরির কাজে করি। আমাদের এলাকা থেকে প্রায় ২০/২৫ জন ভাগ হয়ে উপজেলার বন্দর শংকরপুর, মহিষাপুর, ভাটিকান্দি মথুরাপুর, গাজনা এলাকায় গাছ কাটি। এটিই আমাদের এ মৌসুমের ব্যবসা। স্থানীয় বাসিন্দাদের খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে, তা থেকে পাটালি গুড় ও স্থানীয় ভাষায় লালিগুড় (জুলাগুড়) তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেন। গেল বছর থেকে গাছের সংখ্যা কমেছে। এ মৌসুমে প্রায় ১১০ টি খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ করবো। যে রস সংগ্রহ করি তা দিয়ে প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৮ কেজি পাটালি তৈরি হয়। এক হাড়ি রস ২৫০ টাকা এবং এক কেজি পাটালি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছি।
খেজুর গাছের রস, গুড়-পাটালি বিক্রয় করে খরচ বাদে প্রায় ৪০/৫০ হাজার টাকা লাভ হবে বলে তিনি জানান। রস উৎপন্ন করতে গাছের পরিচর্যায় প্রচুর সময় লাগে, তাই সব মিলিয়ে প্রায় চার মাস মধুখালিতে থাকতে হয় তাদের।
মধুখালী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আলভীর রহমান বলেন, উপজেলাতে মোট ৪২ হাজারের বেশি খেজুর গাছ রয়েছে। এ বছর সঠিক সময়ে শীত পড়ায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে খেজুরের রস আহরণের জন্য গাছিরা আগাম খেজুর গাছগুলো প্রস্তুত করে রেখেছে। এখান থেকে গাছিরা রস আহরণ করে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হয়।
মধুখালী উপজেলাতে প্রায় লক্ষাধিক রস প্রদানকারী খেজুর গাছ রয়েছে। সেখান থেকে গাছিরা খেজুর রস সংগ্রহ করে বিভিন্ন ধরনের পিঠা ও মিষ্টান্ন তৈরী করে নিকটস্থ বাজারে বিক্রয় করে আর্থিক ভাবে লাভবান হয়।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।