নিজেদের দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) সংক্রমণ কমে যাওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হিউম্যান ট্রায়ালের পরিকল্পনা করা চীন এবার বাংলাদেশকে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ।
বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রতিবেদন করা সাংবাদিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে শুক্রবার আবুল কালাম আজাদ জানান, দ্বিতীয় ধাপের ফলাফলকে আরও মূল্যায়ন করতে বাংলাদেশে চীন এই ধাপের ট্রায়াল শুরু করতে পারে।
‘চীন তাদের করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল বাংলাদেশে চালাতে পারে,’ জানিয়ে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ওই ট্রায়ালের পর আমাদের দেশও ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারে। ’
বাংলাদেশে ভাইরাসটির ‘রিপ্রোডাকশন রেট’ কিছুটা কমে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভাইরাসটি আগে একজন থেকে দুইজনকে সংক্রমিত করতো।
কিন্তু আমাদের দেশে রি-প্রোডাকশন রেট (R0) কমে গেছে। এই রেট এখন ১.০৫, যেটি খুব ভালো লক্ষণ। ’
রি-প্রোডাকশন রেট দেখে বোঝা যায় একটি অঞ্চলে কেমন হারে একজন মানুষ থেকে অন্য মানুষেরা সংক্রমিত হচ্ছেন। এটি ১.০৫ মানে গড়ে একজনের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, চীনের উহান শহরে যখন ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে তখন এই রেট ছিল ২.৫।
চীনে এখন পর্যন্ত পাঁচটি ভ্যাকসিন হিউম্যান ট্রায়ালের পর্যায়ে আছে। এর মধ্যে দুটি দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালে সফলতা পেয়েছে। এই দুটির একটির আবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে তৃতীয় অর্থাৎ চূড়ান্ত ধাপের ট্রায়াল শুরু হয়েছে। এই ভ্যাকসিনটি তৈরি করছে চায়না ন্যাশনাল বায়োটেক গ্রুপ বা সিএনবিজি।
ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে সাধারণত তিনটি ধাপ অনুসরণ করা হয়। প্রথম ধাপের চেয়ে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপ বেশি চ্যালেঞ্জিং। এই দুই ধাপে একসঙ্গে অনেক মানুষকে যুক্ত করা হয়। চূড়ান্ত ঝুঁকি এখানেই বোঝা যায়।
বাংলাদেশে ঠিক কোন ভ্যাকসিনটির ট্রায়াল দিতে চায় চীন, সে বিষয়ে অবশ্য কিছু জানা যায়নি।
চীন বলছে চলতি বছরের শেষ দিকে অথবা সামনের বছরের শুরুতে সিএনবিজির ভ্যাকসিন বাজারজাত করা হবে। ইতিমধ্যে দেশটির কর্মকর্তারা কথা দিয়েছেন প্রথম যে দেশগুলো ভ্যাকসিন পাবে, বাংলাদেশ তার ভেতর থাকবে।