• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
১০ দিনেও মামলা না নেয়ার অভিযোগ সালথায় পারিবারিক কলহে পাশবিকতার শিকার ২২ দিনের শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক:-ফরিদপুরের সালথায় জমিজমার বিরোধে পাশবিকতার শিকার হয়েছে ২২ দিনের এক নিস্পাপ শিশু। মায়ের কোলেও তার নিরাপত্তা জোটেনি। তাকে তার মা সহ ছুড়ে ফেলে নির্মমভাবে আঘাত দেয়া হয়েছে তুলতুলে শরীরের নরম মাথা, পা ও ঠোটে। এতে প্রায় ৬ ঘন্টা শিশুটির স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাস ব্যাহত হয়। উদ্বেগজনক অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে ফরিদপুরের বিশেষায়িত শিশু হাসপাতালে। এ ঘটনায় ওই শিশুটির মা এবং তার নানীকেও নির্মমভাবে আঘাত করা হয়েছে। হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম করা হয়েছে। চোখের নিচে হাতুড়ি পেটায় কালচে হয়ে গেছে তার নানীর শরীর। নির্মম এই ঘটনার পর থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার ১০ দিন পরেও থানায় মামলা হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ বলছে, তারা ঘটনার সত্যতা যাচাই করে দেখছে।
জানা গেছে, ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ভাবুকদিয়া গ্রামের এসকেন্দার মোল্লার সাথে তারই আরেক ভাই সেকেন্দার মোল্লার সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। এসকেন্দার মোল্লার স্ত্রী আরজু বেগম (৩৭) লিখিত অভিযোগে বলেন, গত ১৬ আগস্ট একটি ছাগল ছানা প্রতিবেশীর বাড়িতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে সেকেন্দার মোল্লার স্ত্রী শাফি বেগম (৫০) তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তিনি এর প্রতিবাদ করলে শাফি বেগমের ছেলে মেহেদি হাসান (৩০) তার উপর হামলা চালায়। তারা তার মাথার চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে এলোপাতারি কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। এরপর লোহার হাতুড় দিয়ে তাকে পেটায়।
এদিকে মাকে এভাবে মারতে দেখে কোলে শিশু বাচ্চাকে নিয়েই তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যায় তার মেয়ে ইশা (২২)। এসময় তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাকে সজোরে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলে শিশু সন্তানসহ দুরে ছিটকে পড়ে তারা। এতে শিশুটি পাকা সিমেন্টের শানের উপর আর তার মা ইশা তার থেকে দুরে আরেক জায়গায় ছিটকে পড়ে। শিশুটির পেট থেকে মল বের হয়ে যায় এসময়। তার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। পায়ে এবং ঠোটেও জখম হয়। তার শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। তাদের আর্তনাৎ শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে তাদের উদ্ধার করে। আহতাবস্থায় ওই শিশু বাচ্চাকে ফরিদপুরের জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানান, তার মাথায় আঘাত লেগেছে। এছাড়া আহত আরজু বেগমকে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
এ ঘটনার পর আরজু বেগম সালথা থানায় সেকেন্দার মোল্যা (৫৫), ছেলে মেহেদী হাসান(৩০) ও স্ত্রী সাফি বেগমের (৫০) বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। আরজু বেগম বলেন, তারা এ ঘটনার পর জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
শিশুটির মা ইশা বলেন, তার সন্তান পেটে থাকতেই তার চাচী বলতো আমার ছেলে নাকি পেট থেকে পঁচে গলে বের হবে। আর এখন বাচ্চা জন্ম নেয়ার পরপরই তারা আমার বাচ্চাটিকে আঘাত করে দিলো। জানিনা, এর কারণে ওর আরো কোন ক্ষতি হবে কিনা। এসকেন্দার মোল্লা বলেন, তার মৃত্যুর আগেই তার ভাতিজা তার সম্পত্তির আবছা পাবে বলে সকলকে বলছে। আর আমার মৃত্যুর আগেই তারা আমার সম্পত্তির আবছা হিসেবে জমি দখল করে রেখেছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ সাদিক বলেন, এব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক সত্যতা যাচাইপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। নারী ও শিশুর উপর এমন বর্বরোচিত হামলার উপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন পরিবারটি।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।