ফরিদপুরের মধুখালিতে
এস এম আবুল বাশার,মধুখালী প্রতিনিধি :- ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামে গত ২০.০৩.২০২০ তারিখে পুত্রবধুর হাতে মারাত্মকভাবে আহত শ্বাশুড়ি চানবড়ু খাতুন (৬০) গতকাল মৃত্যুবরণ করে। সরেজমিনে জানা যায় চানবড়ু খাতুনের প্রথম পুত্র ভ্যান চালক মৃত লাল মিয়ার সাথে মিনু বেগম (৩৫)এর বিয়ে হয়। তাদের ঘরে একটি পুত্র ও দুটি কণ্যা সন্তান রয়েছে।
এমতাবস্থায় লাল মিয়া এক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করলে মিনু বেগম চাকুরী নিয়ে জর্দান চলে যায়। সম্প্রতি ফিরে এসে একই ইউনিয়নের আমুরদি গ্রামের বিদেশ ফেরত মোঃ ফরিদ মৃধার (৪৫) কে বিবাহ করে। বিবাহের পর হতে মিনু বেগমের সাথে প্রাক্তন স্বামী লাল মিয়ার পরিবারবর্গের কলহের সৃষ্টি হয়। মিনু বেগমের বড় পুত্র ফিরোজ সেক (২৫) কোন ভাবেই মায়ের দ্বিতীয় বিবাহ মেনে নিতে পারে নাই।
আরও পড়ুন এমপি মোশাররফ হোসেন ৫০০ পিপিই দিলেন চিকিৎসকদের মাঝে
মিনু বেগম মাঝে মাঝে প্রথম স্বামী লাল মিয়ার বাড়ীতে এসে ঘরে থাকা আসবাবপত্র নেওয়ার চেষ্টা করে এমনকি দ্বিতীয় স্বামী ফরিদ মৃধাকেও এই বাড়ীতে নিয়ে আসার চেষ্টা করে। এ নিয়েও একাধিকবার মিনু বেগমের সাথে তার পুত্র, কণ্যা ও শ্বাশুড়ির ঝগড়াঝাটি হয়েছে। ঘটনার দিন মিনু বেগম বেলা অনুমান ৩.০০ ঘটিকার সময় বিদেশ থেকে আনা মোবাইল ফোনের পাওয়ার ব্যাংক নিতে প্রাক্তন স্বামীর বাড়ীতে আসলে পুত্র ফিরোজ শেখ বাঁধা দেয়। এক পর্যায়ে মা এবং ছেলের মাঝে কথাকাটাকাটি শুরু হয়।
অবস্থা বেগতিক দেখে শ্বাশুরি চানবড়ু প্রতিবেশীদের খবর দিয়ে বাড়ীতে ফিরে আসার পথিমধ্যে পুত্রবধু মিনু বেগম শ্বাশুরিকে দেখে তার হাতে থাকা পাওয়ার ব্যাংক (মোবাইল চার্জার) দিয়ে শ্বাশুড়ীর মাথায় আঘাত করে। একপর্যায়ে চানবড়ু খাতুন মাটিতে পড়ে গেলে ঘাতক পুত্রবধু মিনু বেগম তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। চানবড়ু খাতুন জ্ঞান হারিয়ে ফেললে প্রথমে তাকে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়।
কর্তব্যরত ডাক্তার তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। ঢাকাস্থ নর্দান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন সময়ে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়।
আরও পড়ুন ঃহোম কোয়ারেন্টাইনে পুরো ফরিদপুর জেলা।। করোনা বিরোধী সচেতনতা অব্যাহত
বেসরকারি হাসপাতালের খরচ মিটাতে না পারায় তার পুত্র চান মিয়া মাকে বাড়ীতে নিয়ে আসে এবং টাকা পয়সা সংগ্রহ করে পূনরায় চিকিৎসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলেও গতকাল ২৬.০৩.২০২০ বেলা অনুমান ১২.০০ ঘটিকার দিকে চানবড়ু খাতুন মৃত্যুবরণ করেন। এ বিষয়ে মধুখালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা সাহেব আলী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি এবং ইতোমধ্যে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চানবড়ু খাতুনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসী ঘাতক পুত্রবধু মিনু বেগমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।