• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই মে, ২০২৪ ইং
আগের মতোই চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনেও মাঠে থাকেনি বিএনপি — তথ্যমন্ত্রী

চট্টগ্রাম, ১৩ মাঘ (২৭ জানুয়ারি) :

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ বলেছেন, বিএনপি আগেও যেমন বিভিন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে কিন্তু মাঠে ছিলো না, একইভাবে চট্টগ্রামের নির্বাচনেও তারা মাঠে থাকেনি।

‘কিন্তু বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও রিজভী আহমেদের সংবাদ সম্মেলনে যা বলেছেন, হেরে যাবার পর মুখ রক্ষার জন্যই এগুলো তারা বলছেন এবং বরাবরের মতোই নির্বাচনে হেরে গেলে বিএনপির অভ্যাসটা হচ্ছে ‘নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা’, বলেন মন্ত্রী।

আজ চট্টগ্রাম মহানগরীতে নিজ বাসভবনে সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।

ড. হাছান মাহ্মুদ বলেন, ‘নির্বাচন চলাকালীন বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করেছে, নির্বাচন শেষ হওয়ার আগ মুহুর্তে আমীর খসরু মাহমুদ চট্টগ্রামে ও রিজভী আহমেদ ঢাকায় বসে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, এবং নানা ধরনের প্রশ্ন তুলেছেন, আমরা আগে থেকেই জানতাম এই সমস্ত প্রশ্ন তোলার জন্যই তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। তারা সব নির্বাচনেই এই সমস্ত গৎবাঁধা প্রশ্ন উপস্থাপন করেন এবং অভিযোগের বাক্স খুলে সবসময় বসে থাকেন।’

চট্টগ্রাম শহরের পূর্বের নির্বাচনি উপাত্ত তুলে ধরে ড. হাছান বলেন, ‘১৯৯৪ সালের পর থেকে কার্যত এখানে বিএনপি কোন ভোটে জেতেনি। মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু সাহেব একবার বিএনপির পক্ষ হয়ে নির্বাচন করেছিলেন। আসলে মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু তো আওয়ামী লীগের মানুষ, বিএনপির কাছে তিনি ভাড়ায় খেলতে গিয়েছিলেন। যেহেতু তিনি দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ করেছেন সেকারণে আওয়ামী লীগের অনেক লোক তার পক্ষে কাজ করেছে, সেই কারণে তিনি জয়লাভ করেছিলেন। তিনি কিন্তু আবার আওয়ামী লীগে ফেরত চলে এসেছেন। সুতরাং ‘৯৪ সালের পর থেকে এই শহরের কোন নির্বাচনেই বিএনপি জয় লাভ করেনি।’

বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের বৈষম্যমূলক বিধান আশপাশের কোন দেশে নেই উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশে এমন একটি বিধি করেছে, যার ফলে কোনো এমপি কোনো প্রচারণা চালাতে পারছেন না, কিছুই করতে পারছেন না। অথচ এই শহরে আমার জন্ম, বেড়ে উঠা, এবং এই শহর থেকেই আমার রাজনীতি শুরু, এই শহরের জামাল খান ওয়ার্ড ছাত্রলীগের মিছিলের কর্মী হিসেবে আমার রাজনীতির জীবন শুরু, আমি চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদকও ছিলাম। দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও কিন্তু এই নির্বাচনে আমরা কোন ভূমিকাই রাখতে পারিনি দলের পক্ষে। এইরকম বৈষম্যমূলক বিধান ভারতসহ আশপাশের কোন দেশে নেই। ইংল্যান্ড ও কন্টিনেন্টাল ইউরোপসহ অন্যান্য দেশেও এমপিবৃন্দ নির্বাচনি প্রচারণা চালাতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে পারেনা। দেখে দেখে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আমরা কিছুই করতে পারি না, সরকারি দলের জন্য এটি অদ্ভুত ও বৈষম্যমূলক বিধান বলে আমি মনে করি।’

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সন্ত্রাস করেছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নগরীর পাহাড়তলী ইউসেপ কেন্দ্রে বিএনপির আক্রমণে দুইজন আওয়ামী লীগ কর্মী আহত হয়েছে, আমবাগান কেন্দ্রে একজন আওয়ামী লীগ কর্মী খুন হয়েছে। পাথরঘাটা কেন্দ্রে বিএনপির আক্রমণে ইভিএম মেশিন ভেঙ্গে দিয়েছে। দেওয়ানবাজার কেন্দ্রে বিএনপি সংখ্যালঘু ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। ল্যাবরেটরি স্কুল কেন্দ্রে একজন আওয়ামী লীগ কর্মী এজেন্ট এখনো নিখোঁজ। লালখাঁন বাজার কেন্দ্রে নগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদকের ছেলেকে আক্রমণ করে রক্তাক্ত করেছে, আরো পাঁচজন আহত হয়েছে। চান্দগাঁও মৌলভী পুকুর পাড় কেন্দ্রে বিএনপির আক্রমণে যুবলীগ কর্মীসহ পাঁচজন আহত হয়েছে, অভিজিৎ নামের এক আওয়ামী লীগ কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। কাজেম আলী স্কুল কেন্দ্রে যুবলীগ কর্মী সোলাইমান আহত হয়েছে বিএনপির আক্রমণে।

‘বিএনপি প্রার্থী ডা. শাহাদাত বলেছেন, ওনারা আওয়ামী লীগের সাথে নির্বাচন করেননি, নির্বাচন করেছেন পুলিশের সাথে’- সাংবাদিকরা এবিষয়ে তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, কেউ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালালে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে সেখানে পুলিশ দলমত নির্বিশেষে সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, লালখাঁন বাজার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে, লাঠিচার্জ করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যেখানে বিএনপি হাঙ্গামা করেছে সেখানেও ব্যবস্থা নিয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগ করেছে সেখানেও ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। পুলিশের দায়িত্বইতো আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা, শান্তি স্থাপন করা।’

নির্বাচনের নামে তামাশা হয়েছে রিজভী আহমেদের এমন বক্তব্যের ব্যাপারে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ড. হাছান মাহ্মুদ বলেন, ‘তিনি একথা বলেছেন দুপুরবেলা, তখন নির্বাচন শেষ হয়নি, আসলে তারা যে হেরে যাচ্ছিলেন, তাদের নেতাকর্মীদের যে নির্বাচনের মাঠে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না সেটিকে ঢাকার জন্য দুপুরবেলা এটা বলেছেন তিনি, আগামীকালও বহু কথা বলবেন। হেরে গেলে অজুহাত দাঁড় করানোর চেষ্টা রিজভী আহমেদ সবসময় করেন। আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো অজুহাত দাঁড় করানোর অপচেষ্টা না চালিয়ে তাদের দুর্বলতাটুকু কোথায় সেটি খুঁজে বের করার জন্য।’

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।