।।রেজাউল করিম।।
৩ দিন আগে ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের উপজেলার বাড়ি থেকে বের হয়ে যান মানসিক সমস্যাগ্রস্থ মেয়েটি।
কাল দুপুরে আমি অপ্রকৃতিস্থ মেয়েটিকে দেখতে পাই টেপাখোলা ইয়াছিন মঞ্জিলের কাছে।
মেয়েটি একে ওকে ঢিল ছুড়ছেন। বকাবাজি করছেন। নিচু একটি গাছের ঝুলে থাকা আম ছিঁড়ে ফেলছে। কাছে গিয়ে কথা বললাম। নাম
ঠিকানা জানা গেলো না।
উৎসুক জনতা ঘিরে রেখেছিলো মেয়েটিকে। কেউ একজন রুটি,কলা ও পানি এনে খাওয়ালো।
ছবি তুলে পোস্ট দেই। পুলিশ কন্ট্রোল রুমে জানাই। পরবর্তীতে রাত এগারটায় বাড়ির লোকের ( ভাইয়ের) সন্ধান পাই।
কোতয়ালী থানার ওসি এম. এ জলিল সাহেবকে আবারো জানাই।
রাত বারোটায় জানতে পারি মেয়েটি রবিউল ও শোভা নামের এক দম্পতির আশ্রয়ে টেপাখোলার একটি স্টিকার হাব( SH) দোকানে আশ্রয় নিয়েছে। আমি ছুটে যাই মধ্যরাতে। ওসি জলিল সাহেব ও ২ নং ফাড়ির ওসি সুনীল সাহেবকে জানালে পুলিশ টিম আসে।
এদিকে ছুটে আসে মেয়ের চাচা আজহার মোল্লা ও ভাই নুর মোহাম্মদ। আমার উপস্থিতিতে রাত ১ টায় পরিবারের স্বজনের কাছে মেয়েটিকে তুলে দেন কোতয়ালী থানার এএস আই আঃরব।
জানতে পারলাম মেয়েটি সাত ভাইয়ের একটিই মাত্র বোন ।যেন সাত ভাই চম্পা।
চম্পাকে ( ছদ্মনাম)উদ্ধারের জন্য ধন্যবাদ জানাই পুলিশ প্রশাসনকে। ধন্যবাদ জানাই আমার পোস্টটি শেয়ার করে যারা মেয়েটিকে খুঁজে পেতে সহায়তা করেছেন তাদেরকে।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই রবিউল ও শোভা দম্পতিকে যারা নানা গল্প পেতে চম্পাকে নিজেদের হেফাজতে রেখেছিলেন পরম মমতায়।
চম্পা ভাইকে চিনতে পারে। হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন। চাচাকে জড়িয়ে ধরেন। চাচা তার পাগড়িটা বুকে ওড়নার মতো করে পড়িয়ে দেন ভাতিজিকে।
সম্ভ্রম রক্ষা করে চম্পা ভাইয়ের গলা ধরে মোটর সাইকেলে চেপে মধ্যরাতে ফিরে চলে নিজ বাড়িতে।
আর অন্ধকারে রাস্তার দু’ধারে ফ্লাড লাইটের আলোতে যতদূর
চোখ যায় দেখলাম চম্পা মিলিয়ে গেছে রাতের মেঘাচ্ছন্ন আকাশের শুকতারা হয়ে।
এভাবে প্রতিদিন ভোরে উঠা নগন্য মানুষ আমি এই নিয়ত করি “আজ যেন কোন একজনের উপকার করতে পারি। ”
আমার ২৫ বছরের নেশার পেশার সাংবাদিকতায় আজও তাই হলো।
জয় হোক মানবতার ।