ফরিদপুরের সালথায় মাদকের রমরমা বাণিজ্য ও জুয়া খেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মাদক প্রতিরোধে পুলিশ-প্রশাসনের উদ্যোগে মাঝে মধ্যে মাদক বিরোধী সভা-সমাবেশ করলেও এতে কোন লাভ হচ্ছে না। পুলিশ-প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। হাত বাড়ালেই মিলছে মাদকদ্রব্য। এক সময় শুধু গাজার রাজত্ব ছিল এখানে। গাঁজার পাশাপাশি এখন ভয়ঙ্কর মাদক ইয়াবার রাজত্ব চলছে।

বৃহস্প্রতিবার সকালে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় প্রথমে মাদকের বিস্তার নিয়ে স্থানীয় এক সাংবাদিক বক্তব্য রাখেন।

এসময় বলেন, আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় মাদক প্রতিরোধ নিয়ে সবাই ভাল ভাল কথা বলে দায় এড়িয়ে যায়। তবে বাস্তবে এর কোন ফল পাওয়া যায় না। সালথায় এখন মাদক বিক্রি ও জুয়া খেলা বেড়ে গেছে। মাদক নিয়ন্ত্রনে প্রসাশন উদ্যোগ নিলেও কোন কাজ হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে মাদকের বিস্তার কমানো যাবে না। তার বক্তব্যে সভায় উপস্থিত অনেকে সহমত জানান।

জানা গেছে, এখন গাঁজা-ফেন্সিডিল ও বিয়ারের পাশাপাশি হরদমে চলছে মরণ নেশা ইয়াবা। যা প্রকাশ্যে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। ইয়াবার ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ছে ভাল ভাল পরিবারের সদস্যরা। তাই স্থানীয়রাও ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন না। এসব মাদক ব্যবসায়ীরা সবাই অল্প বয়সী। এরা যে মাদকের ব্যবসায় জড়িত তা হঠাৎ কেউ বিশ্বাস করবে না। কারণ এরা সবাই ভাল পরিবারের সন্তান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, মাদকের ভয়ানক থাবায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আমাদের আল্প বয়সী ছেলেরা। ধ্বংস হচ্ছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও। তাদের মতে নতুন নতুন মাদক ব্যবসায়ী হওয়ার কারণে বাড়ছে মাদক সেবনকারীর সংখ্যাও। এসব মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক তুলে দিচ্ছে উঠতি বয়সী যুবকদের হাতে। যার মধ্যে বেশিভাগ স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। মা-বাবার চোখের সামনে মাদকাসক্ত হচ্ছে যুবক ছেলে। এ কষ্ট কিভাবে মেনে নিবে অভিভাবকরা। তাই মাদকাসক্ত সন্তানদের চরম দু:শ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে অভিভাবকরা। যুব সমাজকে রক্ষা করতে হলে এসব মাদক ব্যবসায়ীদের খুজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

বিভিন্ন এলাকার সচেতন মহলের ব্যক্তিবর্গ এ প্রতিনিধিকে জানান, মাদক ব্যবসায়ীদের বারংবার মাদকসহ আটক করে আসছে পুলিশ। আটকের পর জামিনে এসে জুয়ারু ও মাদক ব্যবসায়ীরা, পুলিশের মনোবল নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন ভাবে পায়তারা করে আসছে। তারপরও থেমে নেই মাদক ব্যবসায়ীরা। প্রফেশনাল মাদক ব্যাবসায়ী ছাড়াও গ্রাম-গঞ্জে, পথে-ঘাটে প্রায়ই জায়গায় উঠতি বয়সের যুবকেরা ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করছে। এতে যুব সমাজ দিন দিন ধ্বংসের পথে ধাবিত হচ্ছে। এই যুব সমাজকে, ধ্বংসের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে হবে।

সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ বলেন, মাদকের সাথে পুলিশের কোন আপোষ নেই। খোঁজ পেলেই এসব মাদক ব্যবসায়ীদের ধরা হবে। মাদকের ব্যাপারে সালথা থানা পুলিশ কঠোরভাবে মাঠে কাজ করছে। যে কোন মাদক ব্যবসায়ীকে পাওয়া মাত্রই আটক করা হবে।

২৯ অক্টোবর ২০২০