• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

বনিকসমিতি ও পৌরসভার সমন্বয়হীনতা

ভাঙ্গা বাজারে ফুটপাত দখল-যানজট যেন নিত্যসঙ্গী

(ছবিতে ঐতিহ্যবাহী ভাঙ্গা বাজারের প্রধান সড়কে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা ও যানজটের চিত্র)

মোঃ রমজান সিকদার, ভাঙ্গা(ফরিদপুর)প্রতিনিধি-০১/০৩/২০২১

দক্ষিনাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার হিসাবে খ্যাত ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ভাঙ্গা বাজার একটি গুরুত্বপুর্ন স্থান। পাকিস্তান শাসনামলের সময়ে কুমারগঞ্জ থেকে ভাঙ্গা বাজারের সৃষ্টি। সেই থেকে অদ্যবদি ভাঙ্গা বাজার নাম হিসাবেই বাংলাদেশ সহ বিশ্ব দরবারে বহুল পরিচিত।

উক্ত বাজারে আশপাশের কয়েকটি থানা থেকে আগত ক্রেতা সাধারন গন তাদের চাহিদা মত পন্য পাইকারি ও খুচরা আকারে ক্রয় করে থাকে। বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিনাঞ্চলকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে প্রথমেই ভাঙ্গাকে হাই-ওয়ে এক্সপ্রেসের অন্র্Íভুক্ত করেছেন। ভাঙ্গা এখন নামেই শুধু ভাঙ্গা মুলত কাজে ইউরোপকেও হার মানিয়েছে। পদ্মা সেতুর সংযোগ স্থল থেকে শুরু করে ভাঙ্গা পর্যন্ত আন্র্Íজাতিক মানের দৃষ্টি নন্দন সড়ক নির্মান করা হয়েছে। ফরিদপুর-৪ আসনের জনপ্রিয় সাংসদ মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন পর পর দুইবার সাংসদ নিবার্চিত হয়ে উন্নয়নের আমুল পরিবর্তন ঘটিয়েছেন তার সাংসদীয় এলাকায়। সরকারি স্কুল, কলেজ, উন্নত মানের উপজেলা পরিষদ ভবন, আঞ্চলিক ধান গবেষনা কেন্দ্র, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, গ্রামগঞ্জে পিচঢালা সড়ক, নদী বা খালে উপর একাধীক ব্রীজ সহ হয়েছে শত শত উন্নয়ন।

কথায় আছে কুপির নিচে অন্ধকার এই প্রবাদটি যেন শতভাগ সত্যিতে রূপান্তারিত হয়েছে ভাঙ্গার বেলায়। ঐতিহ্যবাহী ভাঙ্গা বাজারে প্রতিদিনের নিত্য সঙ্গী ফুটপাত দখল করে বিভিন্ন মালামাল বিক্রি, অপরিকল্পিত ভাবে ট্রাক, পিকআপ, অটোবাইক, নসিমন সহ নানা ধরনের যান বাহনের প্রবেশের কারনে দিনরাত যানজট সৃষ্টি, বাজারে আগত হাজারো ক্রেতা সাধারনের জন্য নেই কোন আধুনিক সেনেটারির ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে ভাঙ্গা বাজারটি সর্বদা যানজট সহ ময়লা আর্বজনার একটি ভাগারে পরিনত হয়েছে।

বিষয় গুলো দেখভাল করার জন্য রয়েছে ভাঙ্গা বাজার বনিক সমিতি। দীর্ঘ ৯ বছর ভাঙ্গা বাজারের কোন বনিক সমিতির নিবার্চন না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা হয়ে পড়েছে বেপরোয়া। বড়, সিমেন্ট, টিন, চাউল, কাচামাল, কাপড় সহ শত শত পাইকারি দোকান রয়েছে ভাঙ্গা বাজারে। বনিক সমিতির হস্তক্ষেপ না থাকার কারনে এসব দোকানদার গন তাদের মন মত ট্রাক, নসিমন, পিকআপ ভ্যান বাজারে প্রবেশ করায়। বাজারের প্রধান সড়ক জুড়ে রয়েছে শত শত ফুটপাতের ব্যবসায়ী। যারা জুতা-সেন্ডেল, সুতা, পান, পিয়াজ হাটা সহ কাচামালের ব্যবসায়ী। এসব ব্যবসায়ীরা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রধান সড়কের ফুটপাত দখল করে দীর্ঘদিন ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। আর এদের কাছ থেকে আদায় কৃত টাকা চলে যাচ্ছে কথিত নেতাদের পকেটে। অদৃশ্য কারনে এসব বিষয়ে প্রশাসন সহ বনিক সমিতি ও পৌরসভায় অভিযোগ দায়ের করলেও তার কোন সমাধান অদ্যবদি পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারের ব্যবসায়ী জানায়, লক্ষ লক্ষ টাকা জামানত সহ ২০/৩০ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া দিয়ে ভাঙ্গা বাজারে ব্যবসা করে আসছি। অথচ ফুটপাত দখলের কারনে ও ক্রেতা সাধারনের চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় এখন ক্রেতা সাধারন ভাঙ্গাতে মার্কেট করতে আসতে অনিহা প্রকাশ করছে।

ভাঙ্গা বাজারের বিশিষ্ট ঔষধ ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া বিশ্বাস বলেন, নদীতে নৌকা চালাতে যেমন ভালো মাঝির প্রয়োজন হয় ঠিক তেমনি এই আধুনিক যুগে এত বড় বাজার পরিচালনা করার ক্ষেত্রেও দক্ষ নেতার প্রয়োজন। দীর্ঘদিন ধরে ভাঙ্গা বাজার বনিক সমিতির কোন নিবার্চন হয় না। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অতি মুনাফালোভি কিছু ব্যবসায়ী বাজারের পরিবেশটা নষ্ট করছে। তাছাড়া বর্তমান বনিক সমিতির কর্মকর্তাগন ও ভাঙ্গা পৌরসভার মধ্যে কোন সমন্বয় নেই।

বিষয়টি নিয়ে পৌর মেয়র আবু রেজা মোঃ ফয়েজ জানায়, আমরা একটি নিয়ম করে দিয়েছিলাম বাজারে ট্রাক সহ ফুটপাতের বিষয়ে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় নিময়টি বনিক সমিতি বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে।

বাজার বনিক সমিতির সভাপতি শহিদুল হক মিরু মুন্সি বলেন, অনেক বড় বাজার হওয়ায় এখানে একটু বিশৃঙ্খলা হওয়াটাই স্বাভাবিক। বাজারের ভেতরে পেয়াজহাটা, পানহাটা সহ কাচামালের ব্যবসা রয়েছে। এদেরকে যদি সরকারি জায়গায় স্থান্তরিত করা যায় তবে কিছুটা হলেও বাজারের যানজট কমবে।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(চলতি দায়িত্বে) আল-আমিন মিয়া জানায়, আমরা ইতিপুর্বে একাধীকবার ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের জরিমানা করেছি। তারপরেও ফুটপাত দখল মুক্ত করতে ও বাজারের পরিবেশ ক্রেতা সাধারনের জন্য অনুকুল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।