পবিত্র কোরআন শুধু আল্লাহতায়ালার প্রেরিত একটি গ্রন্থ নয়, বরং এটা সমস্ত মানব জাতির জন্য একটা বড় নির্দশনও বটে। আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিম নাজিল করার সঙ্গে সঙ্গে সংরক্ষণ করারও দায়িত্ব নিয়েছেন নিজে। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কারিমকে বিভিন্নভাবে সংরক্ষণ করছেন এবং কেয়ামত অবধি তা সংরক্ষণ করবেন। কোরআন সংরক্ষণের অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে- মানুষের মাধ্যমে কোরআন মুখস্থ করা। যাকে আমরা হিফজ বলি।
পৃথিবীতে যত ধর্মগ্রন্থ আছে তন্মধ্যে কেবল কোরআনই মুখস্থ করা হয়। তাই পৃথিবীতে অসংখ্য অগণিত কোরআনের হাফেজ বিদ্যমান। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো- কোরআন হেফজ করার সময়। কেউ এই মহাগ্রন্থ অল্প সময়ে মুখস্থ করে ফেলে যে, তার রীতিমতো বিস্ময়ের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। সম্প্রতি এমনি বিস্ময় সৃষ্টি করে ১২ বছর বয়সে পবিত্র কোরআন হিফজ (মুখস্থ) করেছে শিশু বালক মোঃ জুবায়ের খাঁন।
মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতিতে নিজের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পুরো কোরআন শরীফ মুখস্থ করে ‘হাফেজ’ খেতাব অর্জন করেছে। এই কীর্তিমান হাফেজ ফরিদপুর পৌরসভার আওতাধীন চরকমলাপুরে অবস্থিত মাদ্রাসা তাহফিজুল কুরআনের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। ১২ বছর বয়সী এই কৃতি ছাত্রের নাম মোঃ জুবায়ের খাঁন। সে ফরিদপুর সদর উপজেলার পশ্চিম গঙ্গাবদ্দী গ্রামের মোঃ ইউসুফ আলী খাঁনের একমাত্র ছেলে। এমন মেধাবী বালকের কীর্তি নিয়ে নিকটতম আত্ত্বীয়-স্বজন সহ এলাকার প্রতিবেশীদের মুখে চলছে তুমুল আলোচনা ও প্রশংসা। বিভিন্ন মাধ্যমে অনেকে এই কম বয়সী হাফেজে কোরআনের খোঁজ খবর জানছেন এবং নিচ্ছেন।
অল্প বয়সে পবিত্র কোরআন মুখস্থ করা প্রসঙ্গে মাদ্রাসা তাহফিজুল কুরআনের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল হাফেজ ক্বারী মোঃ আসাদুল্লাহ্ জানান, ২ বছর আগে এই কম বয়সী বালক মোঃ জুবায়ের খাঁন আমাদের এই মাদরাসায় ভর্তি হয়। সেখানে নার্সারি ও প্রথম শ্রেণি শেষ করে। এর পরে কোরআনে কারিম পড়া শুরু করে। প্রথমে সহিহ-শুদ্ধভাবে দেখে দেখে কোরআন তেলাওয়াত শেখা শেষে কোরআন শরিফ মুখস্ত শুরু করে। আজ ২৭ জুলাই তার ৩০ পাড়া কোরআন মুখস্ত শেষ হয়। মাদরাসার পরীক্ষা, ছুটি বাদ দিয়ে বলা চলে অল্পদিনের মধ্যেই জুবায়ের খাঁন কোরআনে কারিমের হাফেজ হয়েছেন।
হাফেজ ক্বারী আসাদুল্লাহ্ আরো বলেন, আমাদের প্রত্যাশা- আল্লাহতায়ালা তাকে দ্বীনের জন্য কবুল করবেন।
হাফেজ মোঃ জুবায়েরের পিতা মোঃ ইউসুফ আলী খাঁন বলেন, আমার ২ মেয়ে ১ ছেলে, আশা ছিল ছেলেকে কোরআনের হাফেজ বানানোর। আমার সেই আশা পূরণ হয়েছে। জুবায়েরের বাবা-মা ও তার পরিবারের ইচ্ছা সে যেন বড় আলেম হয়।
এ প্রসঙ্গে মোঃ ইনামুল হাসান মাসুম বলেন, হাফেজ মোঃ জুবায়ের খাঁন খুবই নম্র, ভদ্র ও শান্ত ছেলে। সে বড় হয়ে ইসলামের একজন দাঈ ও খ্যাতনামা আলেম হতে পারে। এজন্য সকলেই পবিত্র কোরআনের হাফেজ জুবায়েরের জন্য দোয়া করবেন।
এছাড়াও জুবায়ের পিএসসি পরীক্ষায় সাফল্যর পাশাপাশি মাদ্রাসা ও বিভিন্ন জায়গায় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সাফল্য অর্জন করেছে।