যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামক রোগবিষয়ক শীর্ষ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউসি বলেছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির শুরুর দিকে করোনা ভাইরাসের নিরাপদ ও কার্যকর টিকার প্রথম ডোজ পাওয়া যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের পরিচালক ফ্রান্সিস কলিন্সের সঙ্গে আলাপকালে তিনি মন্তব্য করে এ কথা বলেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফাউসি বলেন, করোনার প্রথম ডোজের টিকাগুলো উচ্চঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির শুরুতে দেওয়ার আশা করা যায়।
মানুষের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ব্যাপারে ফাউসি বলেন, ২০২১ সাল শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আশা করা যাচ্ছে না। এখনো দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার টিকা তৈরিতে সামনের সারিতে থাকা প্রতিষ্ঠান মডার্না ও ফাইজার কয়েক সপ্তাহ পরেই তাদের টিকার ফলাফল পাওয়ার আশা করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ডিসেম্বরের মধ্যেই করোনার টিকা পাওয়ার আশা বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের পরিচালক টুইটার ও ফেসবুকে লাইভে বলেছেন, করোনার টিকা তৈরিতে সামনের সারিতে থাকা মডার্না ও ফাইজার ইনকরপোরেশনের বর্তমান পূর্বাভাস অনুযায়ী, ডিসেম্বরের যেকোন সময়ে এই টিকা নিরাপদ ও কার্যকর কিনা তা মার্কিনিরা জেনে যাবেন।
আরও পড়ুন: করোনা শনাক্তে আগের সব রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র
তবে ফাউসি বলছেন, প্রথম অন্তর্বর্তীকালীন ফলাফল আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পাওয়ার আশা করছি।
এর আগে, গত জুলাই মাসে মডার্না ও ফাইজার তাদের চূড়ান্ত ধাপের টিকা পরীক্ষা শুরু করে। তাদের এই পরীক্ষায় হাজারো মানুষ অংশ নেয়। বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) মডার্না বলেছে, আগামী মাসে তাদের বড় ও বৃহৎ আকারের টিকা পরীক্ষা তথ্য দেওয়া সম্ভব হতে পারে। অন্যদিকে, অক্টোবর মাসেই ফাইজার তাদের টিকার ফলাফল জানাতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা মার্কিন নির্বাচনের পরে যেকোনো এক সময় টিকা পরীক্ষার ফল জানাতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে এখন পর্যন্ত ১৫০টির বেশি টিকা উন্নয়নের পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে, ৪৪ টি টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। ১১ টি টিকা পরীক্ষার চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে সর্বোচ্চ আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত হয়েছে ৯১ হাজার ৫৩০ জন। এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৯২ লাখ ১২ হাজার ৭৬৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এক হাজার ৪৭ জন। এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৭৬৭ জনের।
উল্লেখ্য, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বিশ্বে ৪ কোটি ৫৩ লাখ ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। আর এ মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১১ লাখ ৮৬ হাজার। গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২১৫টি দেশে ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।