গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা অববাহিকায় সামুদ্রিক উদ্ভিদ বাড়তে থাকায় ইলিশ উৎপাদনে রেকর্ড হচ্ছে বারবার। সেই সঙ্গে বাড়ছে ইলিশের আকারও। গত এক দশকে শুধুমাত্র এ অঞ্চলে আরোহণ হয়েছে ৩৭ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ। বিশ্বের ৯১ শতাংশ ইলিশ উৎপাদন হয় বাংলাদেশে। নানা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।
ইলিশ বাংলাদেশে জাতীয় মাছ হলেও এই মাছ নিয়ে দেশে বাস্তবধর্মী গবেষণা একেবারেই কম। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ১৯৫৩ সাল থেকে ইলিশ মাছ নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করলেও এই তালিকায় বাংলাদেশ যুক্ত হয় ১৯৮৪ সালে। গত ৬৭ বছরে বিশ্বে সংগৃহীত ১ কোটি ২৫ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ মাছের মধ্যে ৩৬ বছরে বাংলাদেশে উৎপাদন হয়েছে ৯৭ লাখ মেট্রিক টন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনিস্টিটিউট অব মেরিন সাইন্সেস বিভাগের প্রফেসর ড. এম শাহাদাত হোসাইন বলেন, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা অববাহিকায় প্রতিবছরই ইলিশের উৎপাদন বাড়তে থাকার বড় কারণ এই অঞ্চলে জলজ খাদ্যকণার শক্তিশালী উপস্থিতি রয়েছে।
মূলত ৫শ’ বর্গকিলোমিটারের গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা অববাহিকা ইলিশের মূল বিচরণ ক্ষেত্র। কিন্তু নানা জটিলতায় ডিম পাড়াসহ জীবন চক্রে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ইলিশ মাছকে। তাই বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করা না হলে মাছ আহরণের হার কমে আসতে পারে বলে শঙ্কা মৎস্য বিশেষজ্ঞদের।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনিস্টিটিউট অব মেরিন সাইন্সেস বিভাগের প্রফেসর ড. সাইদুর রহমান চৌধুরী বলেন, সামুদ্রিক মাছের নদীতে প্রবেশের পথ বিভিন্ন ধরনের জাল ফেলে বন্ধ করে ফেলা হয়েছে। এ অবস্থায় অবশ্যই সারা বছরই ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের নদীতে আসার জন্য সাগর ও নদীর মিলনপথ খোলা রাখতে হবে।
সাগরে ইলিশ মাছ ধরার উপর নির্দিষ্ট সময় নিষেধাজ্ঞা থাকায় গত দু’বছর ধরে বড় আকারের ইলিশ মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বলে মনে করেন চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী।
তবে ইলিশের জন্য নিরাপদ স্থান নিশ্চিত করা না গেলে মিয়ানমারের ইরাবতী অববাহিকায় ইলিশ চলে যাওয়ার শঙ্কা মৎস্য গবেষকদের।
২০১৯ সালে বাংলাদেশে আরোহন হয়েছে ৫ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ মাছ।