বয়স বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে বদলাতে থাকে শরীরের সকল কার্যকারিতা এবং রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা। এতে করে নির্দিষ্ট একটি বয়সের পর স্বাভাবিক নিয়মেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। বয়স ৫০ পেরোলেই যার প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে শুরু করে নানা ধরণের শারীরিক সমস্যার মাধ্যমে। এ কারণেই বয়স বৃদ্ধির সাথে এবং বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তি প্রদান করতে জোর দিতে হবে প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসের প্রতি।
ব্রাউন রাইস
ব্রাউন রাইসে থাকা বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন, মিনারেল ও উদ্ভিজ উপকারী উপাদান শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। তবে উপকারী হলেও তা খেতে হবে নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে। এছাড়া ব্রাউন রাইসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিক্যালের ক্ষতিকে কমিয়ে আনে, যা পরোক্ষভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দৃঢ় করে।
মিষ্টি আলু
বেটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ এই সবজিটি সহজেই স্বাস্থ্যকর সবজির খাতায় নাম লেখাবে। মিষ্টি আলুতে উপস্থিত পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বয়স্কদের মাঝে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অবদান রাখে। এছাড়া সাধারণ আলুর মত এতে ক্ষতিকর কার্বোহাইড্রেটের বদলে রয়েছে উপকারী কার্বোহাইড্রেট। প্রতি সপ্তাহে এক-দুই দিন মিষ্টি আলু খাওয়ার ফলে উপকার পাওয়া যাবে।
কচু শাক
সহজলভ্য সকল ধরণের শাকই উপকারী ও সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। তবে কচু শাকের উপকারের মাত্রা খানিকটা বেশি। এতে থাকা উচ্চমাত্রার ভিটামিন-সি এবং অসংখ্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও বেটা ক্যারোটিন খাদ্যাভ্যাসে সহজেই স্বাস্থ্য উপকারিতা যোগ করে। পাশাপাশি কচু শাকে থাকা ভিটামিন-কে বয়স্কদের মাঝে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বুস্টার হিসেবেও কাজ করে।
ডিম
স্বাস্থ্যকর প্রোটিন এবং বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেলের উপস্থিতি ডিমকে সহজেই এই তালিকায় নিয়ে আসবে। সকল বয়সীদের জন্যেই ডিম অত্যন্ত পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার। কিন্তু বয়স্কদের জন্য ডিম বিশেষভাবে উপকারী এতে থাকা প্রাণীজ প্রোটিনের জন্য। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সবল রাখতে নিয়মিত ডিম খাওয়ার কোন বিকল্প নেই।
টকদই
দৈনিক টকদই গ্রহণে পাকস্থলী সুস্থ থাকে, খাদ্য ভালোভাবে পরিপাক হয় এবং পেটের সমস্যার প্রাদুর্ভাব কমে আসে। পেটের সমস্যা কমে যাওয়ায় ঘনঘন অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়। বিশেষত টকদই পাকস্থলিস্থ ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াদের ধ্বংসে কাজ করে, যা সার্বিকভাবে খাদ্য পরিপাকতন্ত্রের জন্য উপকারী।
পানি
বিভিন্ন ধরণের উপকারী খাবারের কথা তো বলা হল, তার সঙ্গে তালিকায় রাখতে হবে পানিকেও। প্রতিদিন অন্তত ৮-৯ গ্লাস পানি পান করতে হবে নিয়ম মেনে। এতে করে মিউকাস মেমব্রেনস তার প্রয়োজন মাফিক আর্দ্রতা পাবে এবং ঠান্ডাজনিত সমস্যা দেখা দেওয়ার হার কমে আসবে। শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে নিজ থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। তাই পুষ্টিকর খাবারের সঙ্গে পানি পানের দিকেও সচেষ্ট নজর রাখতে হবে।