১৯৮৬ সালের ১২ জুন মৃত্যুবরণ করেন কবি, গবেষক ও শিক্ষাবিদ অমিয় চক্রবর্তী। তার জন্ম ১৯০১ সালের ১০ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। তার বাবার নাম দ্বিজেশচন্দ্র চক্রবর্তী এবং মা অনিন্দিতা দেবী। অমিয় চক্রবর্তী বিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ব্যক্তিত্ব।
বাংলা আধুনিক কবিতার ইতিহাসে ত্রিশের দশক ও বুদ্ধদেব বসু, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, জীবনানন্দ দাশ ও বিষ্ণু দের সঙ্গে তার বন্ধন জড়িয়ে আছে। অল্প বয়সে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা আত্মহত্যা করলে তিনি তীব্র শোকে আক্রান্ত হন। তার স্বভাবে পরিবর্তন আসে; চঞ্চলতা ও ক্রীড়ানুরাগ লুপ্ত হয়ে আসে অন্তর্মুখিনতা। তিনি স্বল্পবাক ও ভাবুক হয়ে ওঠেন। এরপর কলকাতায় এসে হেয়ার স্কুলে ভর্তি হন। থাকতেন মামার বাড়িতে। উচ্চশিক্ষিত মামাদের সংস্পর্শে তার মানসজগৎ আলোকিত হয়ে ওঠে। তার মামা তাকে বীরবল ও সবুজপত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। হেয়ার স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাসের পর হাজারীবাগে সেন্ট কোলাম্বাস কলেজ থেকে আইএ পাস করেন।
১৯২১ সালে তিনি ইংরেজি সাহিত্য, দর্শন ও বোটানিতে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন ১৯২৬ সালে। কবি টমাস হার্ডির কাব্য নিয়ে গবেষণার জন্য ১৯৩৭ সালে ডি.ফিল লাভ করেন। পৃথিবীর নানা মনীষীর সঙ্গে তার প্রত্যক্ষভাবে যোগাযোগ ছিল। ১৯২৬ থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য-সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার কাজ ছিল, বিদেশি অতিথিদের পরিচর্যা করা, ক্লাস নেওয়া, রবীন্দ্রনাথকে নানা গ্রন্থ-তথ্য সংগ্রহে সাহায্য করা। ১৯৪৮ সালে তিনি ভারত ছেড়ে স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হয়েছিলেন। কিন্তু দেশের টানে একাধিকবার ভারতে এসেছেন। তিনি দেশিকোত্তম, পদ্মভূষণসহ অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।